চায়না থেকে বাংলাদেশে কোন কোন প্রোডাক্ট সবচেয়ে বেশি ইমপোর্ট করা হয় ?
Which product is most imported from China to Bangladesh?
আপনি কি জানেন কোন প্রোডাক্ট গুলো চায়না থেকে সবচেয়ে বেশি ইমপোর্ট করা হয়ে থাকে ?
সাম্প্রতিক জরিপ থেকে আপনি জানতে পারবেন প্রতি বছর চায়না থেকে মোট আমদানির প্রায় ৪৪% প্রোডাক্ট বাংলাদেশে ইমপোর্ট করা হয়।
এ জরিপ দ্বারা অনুমান করা যায় কি বিপুল পরিমানে প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করা হচ্ছে চায়না থেকে। এবার আমাদের প্রশ্ন জন্মায় যে কোন পণ্য গুলি সবচেয়ে বেশি ইমপোর্ট করা হয়ে থাকে ? এক কথায় সেগুলি হল- ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট, প্লাস্টিক এবং গ্লাস উপাদান, টেক্সটাইল মেশিনারি, স্টিল এবং আয়রন প্রোডাক্ট, ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান, গাড়ি এবং অটোরিকশা ও নানান কাঁচা মাল ইত্যাদি। আমরা আপনাদের জন্য চায়না অনলাইন বিডি এর মত এমন একটি অনলাইন প্লাটফর্ম এনেছি যা আপনাকে প্রায় ২০ কোটি পন্য খুব সহজে ঘরে বসেই আমদানি করার সুযোগ করে দিয়ে থাকে।
চায়না থেকে পণ্য আমদানির কারন ও সুবিধা
আমাদের মত স্বল্প আয়ের দেশে চায়না থেকে পণ্য আমদানির প্রধান কারণ হল চায়না থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চ মানের পণ্য সরবরাহের সুবিধা পাওয়া যায়।
যে সুবিধা গুলির জন্য চায়না থেকে পণ্য আমদানি এত পরিচিতি লাভ করেছে সে গুলি হলো –
- ঘরে বসেই পণ্য আমদানি করার অনলাইন সুবিধা ।
- সাশ্রয়ী মূল্যে ও নিরাপদে প্রায় সকল প্রকার পণ্যের আমদানি সুবিধা ।
- স্বল্প সময়ে পণ্য সরবরাহ করণ ।
- প্রতিটি পণ্যের গুণমান নিশ্চিতকরণ ।
- বৈচিত্র্যশীল পণ্যের সমাহার ।
- উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সমৃদ্ধ পণ্য ।
- অধিক চাহিদা শীল পণ্য ।
- ত্রুটিমুক্ত নির্ভেজাল পণ্য ।
- প্রোডাক্ট পরীক্ষা এবং স্যাম্পল প্রাপ্তির সুযোগ ।
- নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প পরিমাণ পণ্য আমদানির সুযোগ ।
উপরক্ত এই সুযোগ-সুবিধা গুলোর কারণে-ই বাংলাদেশের জনসাধারণ এবং নতুন উদ্যোক্তাগন চায়না থেকে পণ্য আমদানির দিকে সর্বাধিক অগ্রসর হচ্ছে, যার কারনে চায়না পণ্যের ব্যবসা প্রতিনিয়ত সফলতার সাথে উন্নতি করছে।
চায়না থেকে বাংলাদেশে যে সকল প্রোডাক্ট সবথেকে বেশি ইমপোর্ট করা হয়
বাংলাদেশে চায়না থেকে প্রতি বছর প্রায় সকল ধরনের পণ্য আমদানি করা হয়, তাদের মধ্যে সর্বচ্চ হারে আমদানিকৃত পণ্য হলো ইলেকট্রনিক্স আইটেম, খেলনা ও গেমস, প্লাস্টিকের পণ্য, মেকআপ আইটেম, হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস, ফোন কভার, শিশু সামগ্রী, পোশাক এবং টেক্সটাইল, ব্যাগ, মেডিকেল ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাক্ট, বিল্ডিং তৈরির উপকরণ, স্টিল এবং আয়রন প্রোডাক্ট , খাদ্যদ্রব্য।
চলুন এবার এ পণ্য গুলির বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক –
১. ইলেকট্রনিক্স আইটেম
চায়না থেকে বাংলাদেশে প্রতিবছর ব্যাপকহারে ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি করা হয়। এগুলির মধ্যে স্মার্টফোন, টেলিভিশন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া ও আরও অনেক ধরণের ইলেকট্রনিক্স পন্য আমদানি করা হয়।
২. খেলনা ও গেমস
চায়না প্লাস্টিকের খেলনা, ইলেকট্রনিক্স খেলনা এবং গেমের একটি বিশিষ্ট রপ্তানিকারক।
চায়না থেকে শিশুদের জন্য প্লাস্টিকের খেলনা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইলেকট্রনিক গেম পর্যন্ত সব ধরনের খেলনা এবং গেম আমদানি করা হয়।
৩. প্লাস্টিকের পণ্য
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত পাত্র, বোতল, প্যাকেজিং উপকরণ, খেলনা, রান্নার জিনিসপত্র ইত্যাদি সহ প্লাস্টিক পণ্যগুলি চীন থেকে আমদানি করা হয়।
২০২১ সালের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, বাংলাদেশ থেকে প্লাস্টিক পণ্য আমদানিতে প্রায় ৬৯০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে।
৪. মেকআপ আইটেম
বর্তমানে নারীদের মেকআপ পণ্য যেমন ফাউন্ডেশন, আইলাইনার, আইশ্যাডো, মাশকারা, বিউটি ব্লেন্ডার, সানস্ক্রিন, লিপস্টিক, ব্লাশ, হাইলাইটার ইত্যাদির প্রচুর পরিমাণ চায়না থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানুষ চায়ন থেকে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের মেকআপ সামগ্রী আমদানি করে ব্যবসায়িক ও নিজেদের ব্যবহারে প্রবল আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
৫. হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস
রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, সাজসজ্জা এবং রান্নাঘরের পাত্র সহ হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং গৃহস্থালির আইটেমগুলি প্রায়শই চীন থেকে আমদানি করা হয়। যা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক ও সাশ্রয়ই প্রমানিত হয়েছে।
৬. ফোন কভার
ফোন কভার, যা চায়না থেকে আমদানি করা হয়, মোবাইল ফোনের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং তাদের আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যবহৃত হয়।
সাশ্রয়ী মূল্যের মোবাইল ফোনের কভার বাংলাদেশের উৎপাদন না হওয়ার কারণে, চীন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম দামে প্রচুর পরিমাণে ফোন কভার আমদানি করা হয়।
৭. শিশু সামগ্রী
শিশুর ডায়াপার, লোশন, পাউডার, বেবি ফিডার, পোশাক, মোজা, জুতা এবং আরও অনেক কিছু সহ বিভিন্ন শিশুর সামগ্রী চীন থেকে আমদানি করা হয়। এসব শিশু সামগ্রী উন্নত মানের হওয়ার কারণে বাংলাদেশে এ আমদানিকৃত পেণ্যর চাহিদা ও ব্যবহার ব্যাপক।
৮. পোশাক এবং টেক্সটাইল
প্রতি বছর চায়ন থেকে ছেলে-মেয়েদের টি-শার্ট, জিন্স, টুপি, হাতের মোজা, বোরকা, হিজাবসহ বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় পোশাক আমদানি করা হয়। উপরন্তু, চায়ন থেকে পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানি করা হয়।
৯. ব্যাগ
ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বা ব্যবসার জন্য চীন থেকে আমদানি করা ব্যাগের চাহিদা বেশি।
এ কারণে চীন থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় স্কুল ব্যাগ, হ্যান্ড পার্স, ভ্যানিটি ব্যাগ, ব্যাকপ্যাক ইত্যাদি ছোট-বড় ব্যাগ আইটেম আমদানি করা হয়।
১০. মেডিসিন ও মেডিকেল মেশিন সমূহ
চায়না বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট মেশিন সমূহ সরবরাহ করে যা ওষুধ ও চিকিৎসা জগতে প্রয়োগ করা হয়।
২০২১ সালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মেডিকেল সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানিতে প্রায় ৫৫৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে।
১১. কন্সট্রাকশন কাজের উপকরণ
বাড়ি, অফিস, আদালত ইত্যাদি নির্মাণের জন্য চীন থেকে রড, সিমেন্ট, লোহা সহ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর আমদানি করা হয়।
আমদানিকৃত এই সকল উপাদান সমূহ বাংলাদেশের গৃহ নির্মাণ কাজ কে আরও সাশ্রয়ী করে তুলেছে।
১২. আসবাবপত্র
বাসা বা অফিসে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আউটডোর ফার্নিচার চীন থেকে আমদানি করা হয়।
এছারাও চায়না থেকে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে ছোট, বড় এবং বিভিন্ন আকর্ষণীয় মজবুত আসবাবপত্র আমদানি করা হয়।
১৩. স্টিল এবং ইস্পাত প্রোডাক্ট
স্টিলের তৈরি পাত্র, আসবাবপত্র এবং নানান দৈনন্দিন জিনিস পত্র চায়না থেকে আমদানি করা হয়।
২০২১ সালের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, বাংলাদেশ স্টিল-ইস্পাত এবং অনুরূপ উপকরণ আমদানিতে ৭৭৯ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।
১৪. যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম
বাংলাদেশে টেক্সটাইল, নির্মাণ এবং উৎপাদনের মতো শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে, চীন থেকে বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম আমদানি করা হয়। এছাড়াও দৈনন্দিন ব্যবহারের নানা ছোট বড় সরঞ্জাম আমদানি করা হয়।
২০২১ সালের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, বাংলাদেশ থেকে এই যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানিতে প্রায় ৬২৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।
১৫. খাদ্যদ্রব্য
বর্তমানে, চায়না বাদাম, খেজুর, স্ন্যাকস, হিমায়িত খাদ্য সামগ্রী, সয়াবিন তেল, পাম তেল, গম ইত্যাদি সহ বিভিন্ন শুকনো খাদ্য পণ্য আমদানি করা হয়।
এবং বিভিন্ন মুখরোচক খাবার তৈরির উপকরণ আমদানি করা হয়।
এসব পণ্য ছাড়াও বর্তমানে চায়না থেকে বাংলাদেশে আরও অনেক ধরনের ছোট-বড় পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। যেহেতু চায়না স্বল্প মূল্যে উচ্চ মানের পণ্য সরবরাহ করতে পারে, তাই বাংলাদেশে চীন থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের উচ্চ চাহিদা রয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের আরও মজবুত করছে।
চায়না থেকে প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করার নিয়ম/পদ্ধতি
চীন থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানির জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ জড়িত এবং বিভিন্ন নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। এগুলোর মধ্য থেকে বর্তমান সময়ের উল্লেখযোগ্য ২ টি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
- অনলাইনে এর মাধ্যমে পণ্য আমদানি।
- সরাসরি চায়না গিয়ে পণ্য আমদানি।
১. অনলাইনে এর মাধ্যমে পণ্য আমদানি
আজকের বিশ্বে কেউই কঠিন ও ঝামেলা যুক্ত মাধ্যমে পণ্য আমদানি করতে চায়না। তাই, সহজেই অসংখ্য ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের মাধ্যমে চীন থেকে বিস্তৃত পণ্য ক্রয় করতে পারে এবং দ্রুত সেগুলো গ্রহণ করতে পারে। China Online BD হল বাংলাদেশের সেরা চীনা পন্য আমদানি কারক কম্পানি। আপনি এই ওয়েবসাইট বা অ্যাপ এর মাধ্যমে খুবই সহজে অর্ডার করতে পারবেন। এবং ঝামেলা ছারাই খুবই সহজে আপনি পন্য হাতে পাবেন।
২. সরাসরি চায়না গিয়ে পণ্য আমদানি।
ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য চায়না থেকে পণ্য আমদানি করার জন্য, আপনি কেবল পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে চায়না ভ্রমণ করতে পারে এবং বিস্তৃত পণ্য কিনতে পারে। চীন থেকে সরাসরি পণ্য ক্রয় বা আমদানি করার সময়, চায়না থেকে পণ্য গুলো সঠিকভাবে আমদানি করা এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট ট্যাক্স প্রদান করা বাধ্যতামূলক। নতুন উদ্যোক্তা বা ছোট ব্যাবসায়ীদের জন্য এটি একটি ঝামেলাকর পদ্ধতি ।
দুটি পদ্ধতি-ই সবচেয়ে জনপ্রিয় কিন্তু বর্তমান আধুনিক বিশ্বে চায়না থেকে প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করার জন্য প্রথম নিয়ম বা পদ্ধতিটি সবার কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
পরিসমাপ্তি
চায়না পণ্যের এই অকল্পনিও জনপ্রিওতার ও গুনগত মান এর জন্য বাংলাদেশে প্রতি বছর এভাবেই বিপুল পরিমানে পণ্য আমদানি করা হয়। এ আমদানি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও নির্ভরযোগ্য করেছে China Online BD.
সমগ্র দেশব্যাপী বিশ্বাস ও নির্ভরযোগ্যতার মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই অনলাইন প্লাটফর্ম আপনাকে নিমিশেই দিবে চায়না থেকে পণ্য আমদানি/ক্রয়ের এক চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা ।
FAQ (ক্রমাগত জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন)
১. চায়না থেকে কোন প্রোডাক্ট সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয় ?
সাধারণ ইলেকট্রনিক্স বিভিন্ন ডিভাইস যেমন মোবাইল, বিভিন্ন ধরনের শিশু সামগ্রী, ব্যাগ, জুতা, জামা, বিভিন্ন পণ্যের কাঁচামাল, কেম নেটওয়ার্ক, ফোন প্রযুক্তি, বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক চাইনা থেকে সবচেয়ে বেশি ডিজিটাল ইমপোর্ট করা হয়।
২. অনলাইন থেকে কিভাবে চায়না প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করা যায় ?
বিভিন্ন ওয়েবসাইট যেমন China Online BD, BD Express Cargo ইত্যাদির মাধ্যমে ঘরে বসেই চায়না প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করতে পারবেন।
৩. চায়না থেকে বাংলাদেশে প্রোডাক্ট ইমপোর্ট হতে কত সময় নেয় ?
চায়না থেকে আকাশ পথের মাধ্যমে প্রায় ১২-১৪ দিন ও সমুদ্র পথে পণ্য আসতে ২০-২৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
৪. চায়না থেকে সবচেয়ে পণ্য আমদানির কারণ ?
চীন থেকে স্বল্প খরচে সব ধরনের উন্নত পণ্য সরবরাহ করা হয় যা আজকাল খুব সহজে ইমপোর্ট করা সম্ভব। তাই চায়না থেকে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে।